দেশপ্রেমের বিরল দৃষ্টান্ত, বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ

হাফিজুর রহমান লিটন, ছাতকঃ 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এক সময় ছিল আদর্শিক প্রতিযোগিতায় দেশপ্রেমের পাঠশালা। আমাদের গর্ব করার মতো কিছু নেতা ছিলেন, তারা দেশের জন্য হিমালয়ের মতো ছিলেন দৃঢ় অবিচল। গ্রেনেড বুলেট ফাঁসির মঞ্চের সামনে দাড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়ে রক্তগঙ্গায় ভেসে গিয়ে স্বাধীনতা এনেছিলেন। সেই আদর্শের ধারা আজ কতটা কলঙ্কিত! যে চতনা নিয়ে দেশটি স্বাধীন হয়েছিল, সেই চেতনার কানাকড়ি আজ কোথাও খোঁজে পাওয়া যায় না। নীতি নৈতিকতা দেশপ্রেম বিষর্জন দিয়ে এখনকার রাজনীতি হয়ে গেছে পশুর হাটের মতো। 

ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে গিয়ে বাংলাদেশ থেকে দেশপ্রেম বিচার ইনসাফ তামাদি হয়ে যাচ্ছে। এদেশের ৯০% মানুষ নিকট ভবিষ্যতে অন্ধ বধির হয়ে শুধু বোবা কান্না করবে। বাকী ১০% মনে করবে দেশটা তাদের, সরকারযন্ত্র চলবে তাদের কথায়। অসৎ ঘুষখোর, দূর্নীতিবাজ আর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হবে মহোৎসব, নির্বাচনের নামে অনেক গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে হবে প্রহসন।

বোবা জাতি চেয়ে চেয়ে শুধু দেখছে ভোটার বিহীন নির্বাচনের কতো নির্লজ্জ আয়োজন। সাত আসমান জমিনের মাঝে এমন বোবা বিবেকহীন জাতি কি কোথাও আছে? যেখানে জাতীয় নির্বাচনের তপশীল ঘোষণার সময় পুলিশ বিজিবি মোতায়েন করতে হয়। যে প্রেক্ষাপটে ইলেকশন কমিশন ভয় আতঙ্ক নিয়ে সিডিউল ঘোষণা করেছে, সেখানে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতির সাথে তামাশা মাত্র। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোথাও উচ্ছ্বাস আকাঙ্খা উৎসবের কোন আমেজ নেই। তপশীল ঘোষণার সাথে সাথে দেশের মানুষ ফলাফল মিলিয়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে বলছে নির্বাচন হবে আওয়ামী লীগ বনাম ± আওয়ামী লীগ! কিছু  দলছুট কতিপয় নেতা ভয়ে লোভে চরিত্র হারাচ্ছে। 

বিবেক ঘুমিয়ে থাকলে কলঙ্কিত নির্লজ্জ কিছু ব্যক্তি হবে আমাদের আগামীর প্রতিনিধি। 

যাদের যোগ্যতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার নেই, তারা যদি মহা ভারতের জাদুর কাটির ছুঁয়ায় আলাদীনের চেরাগ হাতে পেয়ে জাতীয় সংসদে ঢুকে যায় অবাক হবার কিছু থাকবে না। 

সত্যি কি আমরা স্বাধীন জাতি? এমন স্বাধীনতা কি যোদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কিংবা ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মা চেয়েছিল? প্রশ্ন রাখতে চাই কোথায় আছে আমাদের স্বাধীনতা? প্রধান নির্বাচন কমিশনার কি স্বাধীন? সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা আত্মরক্ষার জন্য কেন পালাতে হল? প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিজে বলছেন  বিদেশিদের চাপে আছেন।

জাতি আর কতকাল থাকবে পরাধীনতার শৃঙ্খলে গোলামীর জিঞ্জিরে বন্দী? হে স্বাধীনতা তুমি কেন এসেছিলে এই বাংলায়?

লন্ডন কিছু দিন ঘুরে বিশাল এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। তাঁরা নিজের চাইতেও দেশটাকে অনেক বেশি গভীর ভাবে ভালোবাসে। তা না হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কিভাবে নতুন করে দায়িত্বভার গ্রহণ করে? আমি খুব বিস্মৃত হয়েছি, এটা সত্যি বিশ্ববাসীর কাছে দেশপ্রেমের বিরল এক দৃষ্টান্ত। এমন একজন দেশপ্রেমিক নেতা কি বাংলাদেশে অনুবিক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খোঁজে পাবেন? ইস্ যদি থাকতো দেশের ভাগ্যটাই বদলে যেত। জানিনা এই আফসোস আর কতকাল আমাদের পুড়াবে। 

আলেম সাহেব মাওলানা হুজুরদের দেশের মানুষ কতই না সমীহ করতো, কিন্তু তারা নিজেদের স্বার্থে কতটা নির্লজ্জ আজ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিমের ক্যালিওগ্রাফি করেছে নৌকার আদলে, এ কেমন তোষামোদি। এসব আলেমদের নিয়ে কত নোংরা ভাষায় মানুষ মন্তব্য করছে, নিজের স্বার্থে এমন মানুষ এতোটা নিচে নামতে পারে? ধিক্কার জানাবার ভাষা খোঁজে পাই না, আল্লাহ তাদের হেদায়েত দান করুক। আচ্ছা সংসদ সদস্য না হলে কি জীবন চলে না! সম্মান পাওয়া যায় না? 

আমরা অনেক আলেমদের বিবেক দিয়ে নয়, আবেগ দিয়ে বিচার করি বলেই তারা সাধারণের সাথে প্রতারণা করে। এরা মানুষের অন্ধ আবেগের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের আখের গোচায়। সরকারের সাথে নীতি নৈতিকতা দেশপ্রেম বিষর্জন দিয়ে স্বার্থ চক্রে একাকার হয়ে গেছে বিবেকহীন কিছু ব্যক্তি, গোষ্ঠী। 

খুব আশ্চর্য হই একজন আসামীকে জামিনে মুক্তি দিয়ে একঘন্টায় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়, সত্যি রাজনীতিতে আদর্শের জায়গা বলতে আর কিছুই থাকছে না।

অযুত নিযুত অন্যায় অত্যাচার অবিচার দেখে গা সয়ে গেছে, আসামি না হয়েও লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ মানুষ ফেরারি। বলবো আমি অন্ধ, আমি বধির, অপরাধী হয়ে জন্মেছি এই বাংলায়, কপাল দোষের দোষী। তাই আমি আজ নিশ্চুপ, কারও প্রতি নেই কোন অভিযোগ। 

এতকাল শোনেছি শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, এখন মনে হচ্ছে শিক্ষা জাতির হাসির পাত্র। 

শুধু আমাদের সন্তানদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ চাই, জানি এটা দূরাশা, তবুও তাদের সুন্দর উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি। 

মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান 

উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদ, ছাতক সুনামগঞ্জ। 

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি।